ছবি
  মনের হদিস কেই বা জানে   মনের হদিস কেই বা জানে কী যে থাকে মনের ঘরে কেউ জানে না, কেউ জানে না সেও জানে না যে ধারণ করে, ধারণ করে। মনের হদিস কেই বা জানে সে হদিস কেই বা জানে কী যে থাকে মনের ঘরে কেউ জানে না, কেউ জানে না সেও জানে না যে ধারণ করে, ধারণ করে না-না কেউ জানে না, কেউ জানে না সেও জানে না যে ধারণ করে, ধারণ করে, খাঁচার পাখি আকাশ খোঁজে- বোঝে না সে বোকা আকাশ ধরতে গোটা জীবন খাবে সময় পোকা। খাঁচার পাখি আকাশ খোঁজে বোঝে না সে বোকা- আকাশ ধরতে গোটা জীবন খাবে সময় পোকা। তবু পাখির মন তো আকাশ 'পরে তবু পাখির মন তো আকাশ 'পরে কেন যে মন এমন করে কেউ জানে না, কেউ জানে না সেও জানে না যে ধারণ করে, ধারণ করে। মনের হদিস কেই বা জানে কী যে থাকে মনের ঘরে কেউ জানে না, কেউ জানে না সেও জানে না যে ধারণ করে, ধারণ করে খুঁজতে গিয়ে ভালোবাসা ঘুরি পথে পথে হাজার নিন্দা চাদর করে চড়ি ফুল'র রথে খুঁজতে গিয়ে ভালোবাসা ঘুরি পথে পথে হাজার নিন্দা চাদর করে চড়ি ফুল'র রথে জানি ভালোবাসা আছে ঘরে জানি ভালোবাসা আছে ঘরে তবু কী মন খুঁজেই মরে কেউ জানে না, কেউ জানে না সেও জানে না যে ধারণ করে, ধারণ করে মনের হদিস কেই বা জানে কী

" বোধ "

" বোধ "

                     ---জীবনানন্দ দাশ

 


          আলো –অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে !
স্বপ্ন নয়- শান্তি নয়-ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়!
            আমি তারে পারি না এড়াতে,
সে আমার হাত রাখে হাতে;
             সব কাজ তুচ্ছ হয়,-পণ্ড মনে হয়,
সব চিন্তা – প্রার্থনায় সকল সময়
              শূন্য মনে হয়,
http://nirrjon.blogspot.com
শূন্য মনে হয় !

সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে!
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো !তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর!- কোনো নিশয়তা
কে জানিতে পারে আর? – শরীরের স্বাদ
কে বুঝিতে চায় আর?- প্রাণের আহ্লাদ
সকল লোকের মতো কে পাবে আবার!
সকল লোকের মতো বীজ বুনে আর
স্বাদ কই!- ফসলের আকাঙ্ক্ষায় থেকে ,
শরীরে মাটির গন্ধ মেখে,
শরীরে জলের গন্ধ মেখে,
উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে
চাষার মতন প্রাণ পেয়ে
কে আর রহিবে জেগে পৃথিবীর’পরে ?
স্বপ্ন নয়,- শান্তি নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে
মাথার ভিতরে!

পথে চ’লে পারে- পারাপারে
উপেক্ষা করিতে চাই তারে;
মড়ার খুলির মতো ধ’রে
আছাড় মারিতে চাই, জীবন্ত মাথার মতো ঘোরে
তবু সে মাথার চারিপাশে! 
তবু সে চোখের চারিপাশে! 
তবু সে বুকের চারিপাশে !
আমি চলি, সাথে সাথে সেও চলে আসে !
আমি থামি,-
সে-ও থেমে যায় ;

সকল লোকের মাঝে ব’সে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে 
আমি একা হতেছি আলাদা?
        আমার চোখেই শুধু ধাঁধাঁ ?
        আমার পথেই শুধু বাধা?
জন্মিয়াছে যারা এই পৃথিবীতে 
        সন্তানের মতো হয়ে,-
সন্তানের জন্ম দিতে দিতে
         যাহাদের কেটে গেছে অনেক সময়,
কিংবা আজ সন্তানের জন্ম দিতে হয়
         যাহাদের; কিংবা যারা পৃথিবীর বীজক্ষেতে আসিতেছে চ’লে
         জন্ম দেবে-জন্ম দেবে ব’লে
         তাদের হৃদয় আর মাথার মতন
         আমার হৃদয় না কি?- তাহাদের মন
         আমার মনের মতো না কি ?-
          তবু কেন এমন একাকী ? 
          তবু আমি এমন একাকী !

হাতে তুলে দেখিনি কি চাষার লাঙল ?
বালটিতে টানিনি কি জল ?
কাস্তে হাতে কতবার যাইনি কি মাঠে ?
মেছোদের মতো আমি কত নদী ঘাটে 
ঘুরিয়াছি ;
পুকুরের পানা শ্যালা- আঁশটে গায়ের ঘ্রাণ গায়ে
গিয়েছে জড়ায়ে ;
-এইসব স্বাদ ;
-এসব পেয়েছি আমি; - বাতাসের মতন অবাধ
বয়েছে জীবন ,
নক্ষত্রের তলে শুয়ে ঘুমায়েছে মন
একদিন;
এইসব সাধ
জানিয়াছি একদিন ,- অবাধ- অগাধ;
চ’লে গেছি ইহাদের ছেড়ে ;-
ভালোবেসে দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে ,
অবহেলা ক’রে আমি দেখিয়াছি মেয়েমানুষেরে ,
ঘৃণা ক’রে দেখিয়াছে মেয়েমানুষেরে ;

আমারে সে ভালোবাসিয়াছে,
   আসিয়াছে কাছে ,
   উপেক্ষা সে করেছে আমারে ,
ঘৃণা ক’রে চ’লে গেছে- যখন ডেকেছি বারে-বারে
   ভালোবেসে তারে ;
তবুও সাধনা ছিল একদিন ,-এই ভালোবাসা ;
    আমি তার উপেক্ষার ভাষা
     আমি তার ঘৃণার আক্রোশ 
অবহেলা ক’রে গেছি ; যে নক্ষত্র – নক্ষত্রের দোষ 
আমার প্রেমের পথে বার-বার দিয়ে গেছে বাধা
      আমি তা ভুলিয়া গেছি ;
তবু এই ভালোবাসা – ধুলো আর কাদা - ।
  
      মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয় – প্রেম নয় – কোনো এক বোধ কাজ করে ।
      আমি সব দেবতারে ছেড়ে 
      আমার প্রাণের কাছে চ’লে আসি ,
     বলি আমি এই হৃদয়েরে :
সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয় !
অবসাদ নাই তার ? নাই তার শান্তির সময় ?
কোনোদিন ঘুমাবে না ? ধীরে শুয়ে থাকিবার স্বাদ
পাবে না কি ? পাবে না আহ্লাদ 
         মানুষের মুখ দেখে কোনোদিন!
          মানুষীর মুখ দেখে কোনোদিন! 
          শিশুদের মুখ দেখে কোনোদিন! 

এই বোধ – শুধু এই স্বাদ
        পায় সে কি অগাধ – অগাধ !
পৃথিবীর পথ ছেড়ে আকাশের নক্ষত্রের পথ
চায় না সে ? – করেছে শপথ
          দেখিবে সে মানুষের মুখ ?
          দেখিবে সে মানুষীর মুখ ?
           দেখিবে সে শিশুদের মুখ ?
চোখে কালোশিরার অসুখ ,
কানে যেঁই বধিরতা আছে ,
যে কুজ – গলগণ্ড মাংসে ফলিয়াছে
নষ্ট শসা – পচা চালকুমড়ার ছাঁচে ,
যে সব হৃদয় ফলিয়াছে 
-সেই সব ।

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

" বিরহের বাণী "

“কেমন করে দেকবো তোমায়-তুমি কোথায়?”

“শুধু তোমার-- ডাগর চোখের জন্য”

" জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন বৃত্তান্ত "